সিংগাইরে শিশু আলআমিনকে হত্যার পর ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল

 

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে শিশু আলআমিকে হত্যার পর ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। আর এ দুর্ধর্ষ ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ছিল হৃদয়। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে সমাজের লাইম লাইটে আসাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।

পিবিআই জানায়, এলাকার হৃদয় হোসেন (২০), সাদ্দাম হোসেন (১৯) ও নাজমুল হোসেন (১৬) সিদ্ধান্ত নেয় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে বড়লোক হতে হবে। মোটর সাইকেল কিনতে হবে। রাজনীতির লাইম লাইটে আসতে হবে। মনোবাসনা পূরণ করতে তারা অপহরণের পথ বেছে নেয়।

এ জন্য তারা এলাকার রুপমের ছেলে রোহান ও তোতা মিয়ার ছেলে রহমতকে বেছে নেয়। কিন্তু রহমতের বয়স বেশি হওয়ায় তাকে অপহরণের চিন্তা বাদ দিয়ে রোহানকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রোহানকে সুযোগমত পাচ্ছিল না তারা। কিন্তু সুযোগমত পেয়ে যায় শিশু আলআমিনকে।

হৃদয় শিশুটিকে ফুঁসলিয়ে বেরুন্ডী এলাকার টেমার বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে অপেক্ষমান নাজমূলের হাতে ছিল বস্তা। আলআমিনকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর পরিধেয় বস্ত্র রেখে বস্তাবন্দি করে পাশের একটি জলাশয়ে ফেলে রাখে। এ খবর মোবাইল ফোনে সাদ্দামকে জানিয়ে দেয়া হয়। নতুন সিম উঠিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হবে।

সিম না উঠাতে পেরে তারা তাৎক্ষণিক মুক্তিপণ চাইতে পারেনি। পরিধেয় বস্ত্র দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল বেছে নেয়। শিশুটিকে অপহরণ করে রাখার জন্য তাদের অর্থ,গাড়ী ও স্থান ছিল না। তাই তারা হত্যা করে পরিধেয় বস্ত্র দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। শিশুটির সাইকেলটি হৃদয়ের বাড়ির পাশে পানিতে ফেলে রাখা হয়।

এদিকে লোকজন টের পাবার ভয়ে জলাশয় থেকে বস্তাটি সেখান থেকে তুলে নিয়ে বাঁশঝাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। লোকজন টের পেয়ে মাটি খুঁড়ে আলআমিনের বস্তাবন্দি লাশ পেয়ে যায়।এর আগেই তিনজন এলাকা ছেড়ে সাভারের একটি হোটেলে গিয়ে উঠে। সেখান থেকে হোটেল বয়ের মোবাইল থেকে আলআমিনের পিতার কাছে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

লাশের সন্ধান পাবার পর গ্রেফতারের আশংকায় তারা হোটেল ত্যাগ করে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু অর্থের অভাবে তাদের পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত ভেস্তে চলে যায়। ফিরে আসে রাজবাড়িতে। সেখান থেকে পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার সূত্র ধরেই পিবিআই তাদের নাগাল পেয়ে যায়।

অপরদিকে একই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে থানা-পুলিশ বড় বাঁকা এলাকার আলী আকবর (২১) কে গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে। তার কাছ থেকে নতুন কোন তথ্য পাওয়া গেছে কিনা, সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।

শিরোনাম