নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ,দূর্নীতি ও অনুষ্ঠানের নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের তীর অফিস সহকারি রাশেদা ও বিউটিসিয়ান মিষ্টি আক্তারের বিরুদ্ধে। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়মের কারণে এ অফিসটি এখন দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, অফিস সহকারী রাশেদা আক্তার একই কর্মস্থলে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকার সুবাদে তার মাধ্যমেই চলে নানা অনিয়ম ও উৎকোচ গ্রহণ। একই ব্যক্তি দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার কারণে বদলির বিধি লংঘন হলেও সে রয়েছে বহালতবিয়তে । ফলে তার ইশারাতেই চলে এ অফিসের নানা অপকর্ম। অফিস কর্মকর্তা রওশন আরা কে ম্যানেজ করে কৌশলে নানা অজুহাতে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনার যেন অন্ত নেই। তাদের স্বেচ্ছাচিরতা ও ঘুষ- দূর্নীতি রোধে সম্প্রতি একাধিক প্রশিক্ষণার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, সরকার অসহায় দরিদ্র বেকার নারীদের স্বাবলম্বী করতে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে গ্রামীণ মহিলাদের আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নেয়। সে মোতাবেক উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের কর্মক্ষম করে তোলেন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে সেলাই কাজ, বটিক, বিউটিশিয়ান।এসব প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রত্যেকে সম্মানি ভাতাও দেওয়া হয় ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট ভর্তির সময় ১০০-১৫০ টাকা নিয়ে ভর্তি বাণিজ্য করা হয় । ভর্তির সময় টাকা না দিতে চাইলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের অর্থ দিতে বাধ্য করেন। প্রশিক্ষণের প্রতিটি ব্লকে ৩০ জনের নামের তালিকা থাকলেও মাত্র ১৫ জনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন । বাকী ১৫ জনের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে কৌশলে উপস্থিত দেখিয়ে তাদের নামে চেক ইস্যু করেন । চেক গ্রহণ কালে কোন প্রশিক্ষণার্থী যদি উৎকোচ দিতে নারাজ হলে চেক ইস্যু নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করেন।এমন কি সরাসরি টাকাও চান অফিস সহকারি রাশেদা ।
এছাড়া সম্মানি ভাতার চেক প্রদানের সময় ১০ টাকার রেভিনিউ ষ্ট্যামের নামে ৫০ টাকা করে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নেয় ওই অফিসের অফিস সহকারি রাশেদা আক্তার। এদিকে বিউটি পালারে প্রশিক্ষণার্থীদের সরকার প্রসাধনি দিয়ে থাকলেও ঐ সামগ্রীর বিপরীতে প্রশিক্ষণে আসা নারীদের কাছ থেকে টাকা আাদায় করেন বিউটিশিয়ান মিষ্টি আক্তার। কেউ টাকা দিত নারাজ হলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা পর্যন্ত করে থাকেন। এছাড়া বিউটিশিয়ানের বিরুদ্ধে রয়েছে যথেষ্ঠ কাজের দক্ষতার অভাব এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে খারাপ আচারণ ও প্রসাধনী ক্রয়ের নামে তাদের নিকট থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ ।
বিগত বছরের মাতৃকালীন ভাতা ও চেক গ্রহণকারি প্রশিক্ষণার্থীর ফাইল ধরে সঠিক তদারকি করলে চেকের অর্থ আত্মসাৎ এর চিত্র বের হয়ে আসবে বলে ভুক্তভোগিরা জানান। করোনা মহামারী সংক্রমণ অজুহাতে এখনও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে খামখেয়ালি অফিসে আগমন ও প্রস্থানের । এতে একদিকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় অপরদিকে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রওশন আরা বলেন,আমার অফিসে কোন অনিয়ম ও দূর্নীতি নেই । যদি কোন অনিয়ম হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব । ইউএনও দীপন দেবনাথ জানান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । তদস্ত করে কোন অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।