ভিপি লুৎফর রহমান রানা ঃঃ
সময় টা ১৯৯৫ সাল। আমি তখন সরকারী সিংগাইর কলেজে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সাত দিনের হরতাল। নভেম্বর এর ১১ তারিখ। তৎকালীন বিএনপি সরকারের ভোটডাকাতি বিরুদ্ধে প্রথম সাতদিনের হরতালের প্রথম দিন। সুষ্ঠু নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। আওয়ামী লীগের মিছিলে বিএনপির ক্যাডার বাহিনীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা। সেদিন রক্তাক্ত হয়েছিলাম আমি , সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মিরুর বাবা আঃ কাদের ও আফজাল মামা।
সেদিন মারাত্মক আহত হয়েও সৌভাগ্য বশত প্রানে বেচে গিয়েছিলাম আমরা তিনজন। আজ সেদিনের কথা খুব মনে পড়ছে। সেদিন মিরু ছিলো ছোট্ট একটি ছেলে। আলতো করে কথা বলতে পারে। সেই মিরু ভিপি হলো। ছাত্রলীগের দায়িত্ব নিয়ে প্রবল গতিতে এগিয়ে চলছে।
কাদের সাহেবের মা আজ বেচে নেই। ৯৪সালে কোন এক রাতে কাদের সাহেবের বয়স্কা মা আমাদের কাছে গল্প করছিলেন বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে। বললেন এই যে টিনের ঘরে তোমরা বসে কথা বলছো এই ঘরের টিনগুলো বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। বললেন আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি।
হয়তো বঙ্গবন্ধুর প্রতি চরম ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতাই ঐ পরিবারের প্রতি আশির্বাদ স্বরুপ মিরুর পড়াশোনা করা ছাত্রলীগ করা এবং ভিপি হওয়া ও ছাত্রলীগের উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হওয়া।
একটি মাত্র ছেলে ঐ পরিবার থেকে শিক্ষা অর্জন করা ও যোগ্য হয়ে গড়ে উঠা কাদের সাহেবের জন্য এক অসামান্য পরিশ্রম ও সাধনা। সেদিন কাদের সাহেব নিহত হলেও এত কস্ট লাগতোনা। সেদিনের লড়াই ছিলো গনতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য সৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আজ দলীয় কর্মীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হলো মিরু। একজন পিতা একজন কাদের সাহেব ই জানেন এই ব্যাথা কত ভারী। এই কস্ট কত নির্মম। আমৃত্যু এই যন্ত্রনা কিভাবে সইবে এই পরিবার।
অরাজনৈতিক অযোগ্য ব্যাক্তিদের কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্ব থাকা ও চরম অবহেলিত রাজনীতির বলিদান এই ভিপি মিরু হত্যাকান্ড। আমি সিংগাইর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি হিসেবে এই হত্যাকান্ডের যথার্থ তদন্ত ও দোষী প্রতিটি ব্যাক্তির যথোপযুক্ত শাস্তি চাই। এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই সিংগাইর কলেজে একটি ছাত্র হোস্টেল তৈরি করে এর নামকরণ ভিপি মিরু হল ঘোষণা করা হোক। মিরুর আত্মা শান্তি পাক। অনাচার অত্যাচার নিপাত যাক। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।