মোঃ কোহিনূর ইসলাম রাব্বি ঃঃ
হুজুরের সাদাসিধা জীবনযাত্রা। এত সাদা মনের মানুষ ছিল যে, যাহারা নিজ চোখে দেখেন নাই, বিশ্বাস করা কষ্টকর হইবে। তাঁহার ঠিকানা হইত গরমে দিনের বেলায় গাছ তলায়, রাত্রি বেলায়ও গাছ তলায়। দেশী-বিদেশী যত রথী-মহারথী আসুন না কেন, আম দরবারী আলাপ হইলে গাছ তলায়ই হইয়াছে। জীবনের শেষ কয়টি বছর হুজুর সবচেয়ে বেশী দরবার করিয়াছেন, বাস-ভবনের প্রবেশ পথে, কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে এবং বর্তমান মাজারের প্রবেশ দ্বারে বট গাছের নীচে।
মাজার সংলগ্ন তাল গাছ ও আমগাছটির তলায়ও বহু দেন-দরবার হইয়াছে। এইসব দরবারে হাজির হইতেন গ্রাম্য মাতব্বর হইতে শুরু করিয়া মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট, রাষ্ট্রদূত, দেশী-বিদেশী কূটনীতিক ও সাংবাদিক। দেন-দরবারে হুজুরের আশ্চর্র্য রকমের একটি শক্তি ছিল-তাহা হইল অনর্গল কথা বলা, কথায় সায় দেওয়া, কথায় যোগান দেওয়া ছিল ভক্তদের কাজ। কথা কইতে হুজুর কিছুতেই ক্লান্ত হইতেন না। শ্রোতারাও ক্লান্ত হইত না। কারণ সব কথা নিত্য-নতুন মনে হইত। কথায় কথায় কোথা হইতে যেন প্রাণ ও আনন্দ, আশা ও সহমর্মিতা জমজমের মত বহিয়া যাইত। ইহারই মধ্য দিয়া চলিত হালকা মেহমানদারী, কখনো হুজুর নিজ হাতে নিজে ব্যস্তসমস্ত হইয়া করিতেন, কখনো হুজুরের হুকুমে তাঁহার পছন্দ-অপছন্দ বাছিয়া আমাদেরকে করিতে হইত। মজলুম জননেতা ভাসানী ছিলেন সেই সাদা মনের হুজর,যে হুজুর জাতিকে দিক-দর্শন দিতেন।
তথ্য সূত্র–আমার ভালোবাসা মওলানা ভাসানী, সৈয়দ ইরফানুল বারী