বাংলা সাহিত্যের ধারা বিশ্লেষণে মহাকবি সিরাজ উদ দৌল্লাহ্

মো.আলতাফ হোসেনঃ
১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ভারতউপমহাদেশে ইংরেজশাসনেরঅবসান ঘটে। পাকিস্তানরাষ্ট্রেরজন্ম হয়।পূর্বপাকিস্তানেরসাধারণমানুষ স্বভাবতকারণেইআশাকরেছিল দীর্ঘ দিন পর বৃটিশ শোষণের পর শ্রমজীবি ও কৃষক শ্রেণিতাদের স্বাধীনসত্তারবিকাশঘটায়ে মৌলিকঅধিকারের দাবী প্রতিষ্ঠিতকরতেসক্ষমহবে। কিন্তু সে আশার স্বপ্ন কোনদিনইবাস্তবেরূপায়িতহয়নাই। পূর্ব পাকিস্তানেরমানুষহয়েছে শোষিত, লাঞ্ছিত ও বৈষম্যেরশিকার। এ অবস্থায় শেখমুজিবুররহমানতাঁরবিপ্লবী কন্ঠস্বরের মাধ্যমে সমগ্রজাতিকে এক সূত্রে গেঁথে শোষণেরবিরুদ্ধে আন্দোলনগড়েতুলেছেন। অনেকচরাইউৎরাই পার হয়েঅবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনসার্বভৌমবাংলাদেশ রাষ্ট্রেরঅভ্যুদয় হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর ২০০৬ সালঅবধিওপ্রশ্নছিলভাগ্যেরকতটাপরিবর্তনহয়েছে এ দেশেরমধ্যবিত্ত শ্রেণির, শ্রমজীবি ও কৃষক শ্রেণির? তাদের স্বাধীনসত্তারওপর ভর করে মৌলিকঅধিকারের দাবী প্রতিষ্ঠাকরতেকতটাসক্ষমহয়েছে? সাধারণমানুষকতটা পেয়েছে স্বাধীনভাবে পথ চলারসুযোগ?

সুশাসনেরছায়ায়কতজনপাচ্ছেনিরাপদ জীবনযাপনেরঅধিকার? এ কথাতখনছিলশতভাগ স্বীকৃত যে স্বাধীনতার স্বপ্নবাস্তবায়িতহয়নাই। আর এ অবস্থা থেকে ই কবিসিরাজ উদ দৌল্লাহতাঁরকাব্য রচনারসূচনাকরেছেন। স্বাধীনতাতুমিকাব্যগ্রন্থের স্বাধীনতাতুমিকবিতায়তিনিলিখেছেন, “স্বাধীনতাতুমিনওরাজহংসপাখিরমতডানা মেলেচলাআর লম্বা ঠোঁটে দাড়কিনামাছগিলে ফেলা” “স্বাধীনতাতুমিনিয়মেরশিকলেবাঁধাবৃত্তে মুক্তির মেলা মেধাআর দক্ষতায় পথ চলার ভোলা” “স্বাধীনতাতুমিকথাবলারপূর্ণ অধিকারতিনযুগ পর আমারসকাশেব্যারেলব্যারেল রক্ত ভেজাআকাশেআজওউদিতহওনিসূর্য স্বাধীকার” এক ই কাব্যগ্রন্থেরপ্রশ্নকবিতায় এত রক্ত! এত বছর পর! এত মায়েরকান্না! লাশের পর লাশ! আরবঞ্চনাকতদিনদিবেএমননতুন বেদনা।” এক ই কবিতায়“হাজারোপ্রশ্নআমারউত্তরপাবকারসম্পাশেতাল গোলকাকায়েমত্তসবায়হরিষে”। এক ই কাব্যগ্রন্থেরঅনুভবকবিতায় “রক্তের নদীবালুচরে থেমে গেল দুপুরেপড়েনিসাগরেরাতেরআঁধারে। আসেনি স্রোত জোয়ারভাটায় গোধূলী বেলায়।”তুমি যে তুঙ্গে দেখছ সফলতাঅধঃহয়েখুঁজনি ব্যর্থতাআমি যে করেছিঅনুভব রক্ত ক্ষরণকরেসব।”আত্নারশরণকাব্যগ্রন্থেরপরাভবেকবিতায়“ছিন্ন বৃন্তেশুকায়েফুলউড়েবাতাসেবিকশিতহয়নি চেতনাআমারআকাশে।” এক ই কাব্যগ্রন্থেরএকুশকবিতায়“একুশেতেবীজবুনেছি স্বাধীনতারফসল পেয়েছিগাছ পেয়েছিফুল পেয়েছিগাছেরতলেফলপড়েছেঝড়ে।” একই কাব্যগ্রন্থেরকখনজানবোকবিতায়“কবেফুটবেফুল
এ মনে এ শুষ্কতাকাটায়েকাননেএবে খর রৌদ্রেঝরেফুলবৃন্তএড়েতাপেমুকুলশুকায়েঝরেমরে।”পদ্মারতীরেকাব্যগ্রন্থেরনামশীর্ষককবিতায়“নীরবনদী বিদ্রোহছাপতবু হেরিঅশ্রুরূপজলরাশিশতব্যথাবুকেভরি” এক ই কাব্যগ্রন্থেরকাঁঢ়ারীকবিতায়নিশীথ এ রাতেএখানে সেখানে দলে দলে করেছেগানসবেআপনারনিশানে”আসকাঢ়ারীডাকযাত্রী সব এক পতাকায়নিয়েআস তোলরব”ধরহাল তোলপালছাড়তরী হাঙ্গর কুমির সর্প ভরানদীদিতেহবেপাড়ি যেখানেআছে মুক্তির ঠিকানা লঙ্গিতে আজিকারবিষধরফনা।” এক ই কাব্যগ্রন্থের মোরা সৈন্যদল কবিতায়“চলেযাবঠিকানায় রেখেযাবফুল মোরবল মোরা সৈন্য দল”শিকল ভেঙ্গে ফেলকাব্যগ্রন্থেরশিকল ভেঙ্গে ফেলকবিতায়তিনিলিখেছেন“পুরানশিকল ভেঙ্গে সবায়নতুনশিকল গড়

যেইশিকলেফুটবেহাসিঘরেনতুনকুঁড়িআবারজাগবেনতুনকরে।”বাংলা দেশেরকথামহাকাব্য সহকবি এ পর্যন্তলিখেছেন ১৬টি কাব্যগ্রন্থ। প্রকৃতি প্রেমিককবিরকবিতায়মামাটিমানুষেরকথাই বেশীফুটে উঠেছে। মামাটিমানুষেরকবিহিসেবে স্বীকৃতিওএসেছেতাঁর। কবির ছন্দ গাঁথাবাংলা ও ইংরেজীকবিতা গুলিআমাদের এক দিকে যেমন স্মরণকরিয়ে দিয়েছে শেক্সপিয়র, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, পি বি শেলী, জনমিল্টন, জনকিটসপারস্যেরকবি ফেরদৌসীওইতালিয়ানকবি দান্তেরকথা তেমনি স্মরণকরিয়ে দিয়েছেমাইকেল, রবীন্দ্র, নজরুল, জীবনানন্দ সত্যেন্দ্র ও বন্দে আলীমিয়ারকথা।

লেখকঃগবেষক,শিক্ষক,সাবেকজাতীয় ক্রীড়াবিদ (কারাতেব্লাক বেল্ট ১ম ড্যান),
সভাপতিশারীরিকশিক্ষাবিদ সমিতি, চেয়ারম্যানগ্রিনক্লাব,সাংবাদিক ও কলামিস্ট

শিরোনাম