মোঃ অহিদুল ইসলাম ঃঃ
দানের হাতটা সবার থাকে না, যাদের থাকে তাদের বেশীরভাগই অসহায় এবং হতদরিদ্র। অঢেল ধনসম্পত্তির মালিক হলেই দানের হাত হয় না! চাই মানবতাবাদী সুন্দর একটি মন,চাই প্রশস্ত একটি হৃদয়।অনেক গরীব দেখেছি কৃপণতার লেশমাত্র নেই কিন্তু দানখয়রাতে এগিয়ে। এরকম মানুষও সমাজে এবং আমাদের আশেপাশেই আছে। যাদের দানের হাতটা খুবই গোপনীয় এবং ইজ্জতের সহিত দিয়ে থাকে,এরাই প্রকৃত দান বীর। এই দানের হাতটাই আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়। আর ঢাক ডোল পিটিয়ে সাহায্যের নামে ফটোসেশনের আয়োজন করে যা করা হয় উহা নিছক লোকদেখানো ছাড়া কিছুই নয়।
ধর্মে সাহায্যের বিষয়ে কঠিন গোপনীয়তার কথা বলা হয়েছে। নির্দেশ থাকা সত্যেও ওদিকে আমাদের কোন ভ্রূক্ষেপই নেই! মানুষ দেখুক জানুক আমি কতবড় দান বীর!বেশীরভাগ এই নীতিতেই চলছি। অহংকারীর এবাদত যে,কখনোই আল্লাহর দরবারে কবুল হয়না,বরং ধ্বংস অবধারিত।কমবেশী সবার জানা থাকা সত্যেও ওদিকে এগোয় না। নাম চাই নাম, কাজ কতটুকু হলো ওটা বিষয় না।পুঁজিবাদীরা নামমাত্র দু’চার আনা দিয়েই তৃপ্তির ঢেকুর তুলে। কড়ায়গণ্ডায় হিসাব করে কে ক’জন যাকাত দিয়ে থাকি? তার খবর কি রাখি ? যদি তা-ই হতো তাহলে এদেশে গরীব খুঁজে পাওয়া যেত না।কিন্তু গাল ফুলিয়ে নবীর উম্মত আল্লার বান্দা দাবি ষোলো আনাই করি। সাহায্য কে পাবে কে পাবেনা এ বিষয়েও আমাদের জ্ঞানের অভাব আছে।
আগে পরিবার আত্মীয় নিকটাত্মীয় প্রতিবেশী এবং পরের আত্মীয়গণই পাবে। কোরান তা-ই বলে। মসজিদ মাদ্রাসা মন্দির প্যাগোডা আরও অনেক পর। কিন্তু এখানেও আমাদের বিড়াট গলদ রয়েছে। আগে মানুষ পরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।ওয়াজে মাহফিলে কীর্তনে টাকা কালেকশনের প্রতিযোগিতা হয় অথচ তারই পাশে রোগে শোকে অর্ধাহারে অনাহারে কঠিন মানবেতর জীবনযাপন করছে কেউ ফুকচিও দেইনা। অথচ ইটপাথরে গড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সুন্দর চোখ ঝলসানো ঝাড়বাতি আর টাইলসের সমাহার। এই সাধারণ বিষয়টা আমাদের বিবেকে ধরে না! যদি প্রশ্ন রাখি, মানুষ আগে নাকি ধর্ম আগে ?
অবশ্যই সকলে একমত হবো যে, মানুষই আগে। মানুষ বাঁচলে তো ধর্ম ও প্রতিষ্ঠান হবে। ধর্মের মূল কোথায় সেটাই আগে জানতে হবে। এজন্যই জাতীয় কবি বলেছেন, মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোন মন্দির কাবা নাই। সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।
লেখক-মো: অহিদুল ইসলাম,ভাকুম, সিংগাইর, মানিকগঞ্জ