চকরিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ

 

কফিল উদ্দিন, চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ঃঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে এলাকায় মহড়া দেওয়ার সময় স্থানীয় জনতা তিনজন সন্ত্রাসীকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। এ সময় একটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। সোপর্দকৃত তিন যুবক ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী গ্রামে সশস্ত্র এই মহড়া দেয় একটি পক্ষের হয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় ক্ষুদ্ধ জনতা জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে প্রায় ১৫ সদস্যের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ছাইরাখালী গ্রামে এই মহড়া দেওয়া শুরু করে। গ্রামের আমির আলী ও তালেব আলীর মধ্যে লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ দেখা দিলে তালেব আলীর পক্ষে ছাইরাখালী গ্রামে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে এলাকায় মহড়া দেওয়ার পর সেখানে সালিশ-বৈঠকে বসে দুইপক্ষ।

সেই সালিশে তালেব আলীর পক্ষে যাওয়া বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষকে গুলি করার ভয় দেখায়। এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে চারিদিক থেকে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে সন্ত্রাসীদের গণপিটুনি দেয়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে তিন সন্ত্রাসী। তন্মধ্যে একটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যও রয়েছে।

গণপিটুনির পর পুলিশের কাছে সোপর্দকৃত তিন সন্ত্রাসী হলেন সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও মানিকপুর গ্রামের মৃত মনোহর আলম সিকদারের ছেলে জাহেদুল ইসলাম সিকদার (৪০), চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরণদ্বীপ গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মো. ইমরান (২৬) ও একই ইউনিয়নের বুড়িপুকুর গ্রামের মোজাহের আহমদের ছেলে আবদুর ছবুর (৩৫)।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম জানান, তার পরিষদের সদস্য জাহেদুল ইসলাম সিকদার বহু অপকর্মের হোতা। তার হেফাজতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সে বিভিন্ন স্থানে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও যায়। শনিবারও সে সদলবলে সশস্ত্র অবস্থায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী গ্রামে গেলে গণপিটুনির শিকার হয়। পরে পুলিশ গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিনজনকে জনতার রোষানল থেকে আটক করে।

চেয়ারম্যান আরো জানান, নিজ ইউনিয়নেও জাহেদুল ইসলাম সিকদার প্রতিনিয়ত ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে অন্তত ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। কয়েকটি মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। কিন্তু এতদিন পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, পাওনা টাকার লেনদেন নিয়ে দুইপক্ষে সালিশ-বৈঠকে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার সময় ক্ষুদ্ধ জনতা বেশ কয়েকজনকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া শুরু করলে তিনজন ছাড়া অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে তিনজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে জনতা। এ সময় অভিযান চালিয়ে পুলিশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র (শর্টগান) উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

শিরোনাম