সংবাদ জমিন ডেস্ক ঃঃ
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে বোমা পুঁতে রাখার অভিযোগে করা মামলায় ১৪ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ -এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ (পলাতক), মো. লোকমান (পলাতক), মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল (পলাতক), মোছহাব হাসান ওরফে রাশু (পলাতক), মো. আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া, শেখ মো. এনামুল হক (পলাতক), মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক হোসেন, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী এবং মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। দণ্ডিতরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতা-কর্মী। ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়েছে রায়ে। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে প্রচলতি নিয়মে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলেছেন বিচারক।
এর আগে গত ১১ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। ঢাকার মহানগর আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, “ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।”এদিন কারাগারে থাকা আসামিদের সকালে রায়ের জন্য আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত এলাকার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন ওই স্থানেই শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। ২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন সিআইডির এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চলার বিভিন্ন সময়ে আদালত মোট ৫০ সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালের ২০ অগাস্ট নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন দল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) দশ নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আপিলের রায়েও ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাই কোর্ট। যাবজ্জীবন সাজার এক আসামি এবং ১৪ বছর কারাদণ্ডের দুই আসামির সাজাও বহাল রাখা হয়েছে। ১৪ বছর সাজার এক আসামিকে খালাস দেয় হাই কোর্ট।