কলাম : প্রতিষ্ঠিত হোক সত্যের জয়

 

ডা: সিরাজুল ইসলাম আন্নু ঃঃ
ধর্ম নিয়ে কথা বলতে ভয় হয়। অনেক চরম যৌক্তিক কথা মানুষ ভয়ে বলে না বা গোপন করে। আবার অনেক দুর্বল যুক্তির কথা সবলভাবে তুলে ধরে অতি মুসলিম সাজে। অনেকে আবার কুরআনকে পাশ কাটিয়ে হাদিসকে বেশি প্রাধান্য দেয়। যেমন সাম্প্রতিক মামুনুল হক সাহেবকে নিয়ে বিচিত্র ধরণের সত্য-মিথ্যার প্রলেপে তার চারিত্রিক গুণাবলী আলোচনা হচ্ছে। ফাঁস হচ্ছে অনেক অজানা কাহিনি। কিন্ত কুরআনে আল্লাহ্ বলেন,”তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বেও সত্যকে তোমরা গোপন করো না”। সুরা বাকারা ২:৪২।”হে আহলে কিতাবগণ! কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে সংমিশ্রণ করছ এবং সত্যকে গোপন করছ অথচ তোমরা তা জান”। সুরা আলে ইমরান ৩:৭১

কুরাআনে আরও অসংখ্য আয়াত আছে মিথ্যার উপর সত্যের জয় নিয়ে। কিন্ত হাদিসে শুধু মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি গোপন করার কথা আছে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি, ভুলভ্রান্তি খুঁজে বের করো না। যে ব্যক্তি অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায় ও প্রকাশ করে দেয়, স্বয়ং আল্লাহ তার দোষ প্রকাশ করে দেন। আর আল্লাহ যার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন তাকে নিজের বাড়িতেই লাঞ্ছিত করেন।’ (আবু দাউদ : ৪৮৮০)। আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে দুনিয়াতে কোনো বান্দার দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন।’’ [মুসলিম ২৫৯০, আহমদ ২৭৪৮৪, ৮৯৯৫]।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমার সব উম্মতের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে; কিন্তু দোষ-ত্রুটি প্রকাশকারীর গোনাহ মাফ করা হবে না। দোষ-ত্রুটি সে এভাবে প্রকাশ করে যে, কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা কোনো কাজ করল, অতঃপর

সকাল হলো। মহান আল্লাহ তার এ কাজটি গোপন রাখলেন। সে (সকালবেলা মানুষের কাছে) বলে, হে অমুক! আমি গত রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে রাতযাপন করেছিল এমন অবস্থায় যে, আল্লাহ তার কাজগুলো গোপন রেখেছিলেন আর সে সকালবেলা আল্লাহর এ অন্তরাল সরিয়ে দিল।” (বোখারি)। সুতরাং নিজের গোপনীয় বিষয়ও অন্যদের কাছে ফাঁস করা যাবে না।

যাকে নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, কে তার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে দিয়ে তাকে এমন হেনস্তা করলো? তার হেনস্তার জন্য দায়ী তার কৃতকর্ম এবং স্বেচ্ছায় মিডিয়ায় এসে ফাঁস করে দেয়া। শেষ হাদিস অনুযায়ী আল্লাহ্ও তাকে ক্ষমা করবেন না। তবে আমরা যদি আকিমুস সালাহ অনুযায়ী আমাদের ধর্ম ও জীবন চালাই তবে অনেক বিতর্ক এড়ানো যায়। যুক্তি, সত্য-মিথ্যা, বিচার-বিবেচনা এগুলো শুধু মানুষের জন্য, পশুপাখির জন্য নয়; এখানেই আমাদের পরিষ্কার পার্থক্য। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার জয় হোক, জয় হোক মানব জীবন এবং প্রতিষ্ঠিত হোক সত্যের জয়।

শিরোনাম