‘কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেড’এর সৌজন্যে ক্রুজশিপে ভ্রমণ

 

সংবাদ জমিন ডেস্ক ঃঃ
বিশ্বের সি ট্যুরিজমের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো ক্রুজশিপ বা বিলাসবহুল জাহাজ। এসব প্রমোদতরী গভীর সমুদ্রে ভেসে থাকলেও এখানে রয়েছে আধুনিক সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা এবং নীল জলরাশি ও আকাশের মিতালী উপভোগ করার সকল ব্যবস্থা। বিলাসবহুল ক্রুজশিপে চড়ে ঘুরে বেড়ানো আমাদের জন্য এতদিন অধরাই ছিল। তবে এবার সেই সুযোগের দুয়ার উন্মোচন হয়েছে বিলাসবহুল ক্রুজশিপ বে ওয়ানের বদৌলতে। আর এই অভূতপূর্ব সুযোগ করে দিয়েছে চট্টগ্রামের বিখ্যাত ‘কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেড’। দেশের পর্যটকদের আন্তর্জাতিক মানের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিতে জাপান থেকে বিলাসবহুল এই বিদেশি ক্রুজশিপ ‘বে ওয়ান’ কেনা হয়েছে। বে ওয়ান প্রথমে কক্সবাজার সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল শুরু করলেও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান শেষে এই রুটে প্রথম চলাচলকারী জাহাজ এমভি কর্ণফুলীই পুনরায় চলাচল শুরু করে।

আর এমভি বেওয়ানকে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনের মধ্যে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনের মধ্যে চলাচলকারী পর্যটকবাহী বিলাসবহুল কোনো ক্রুজ জাহাজ দেশে এটাই প্রথম। ১৪ জানুয়ারি পতেঙ্গা থেকে মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র হয়ে সেন্টমার্টিনে প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে যাতায়াত শুরু করে জাহাজটি।

২১ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন এবং শনিবার সকাল ১১টায় সেন্টমার্টিন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করলেও বর্তমানে সপ্তাহে ২ দিন চলাচল করছে। সপ্তাহের প্রত্যেক বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে পরের দিন সকাল ৭টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছায় এবং শুক্রবার সেন্টমার্টিন অবস্থান করে শনিবার সকাল ১১টায় পতেঙ্গার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এসে পৌঁছায়। পরে সোমবার ও বুধবার জাহাজটি পতেঙ্গা ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে যাতায়াত করে।

জাহাজটি আইএমও রেজিস্টার্ড সমুদ্রগামী তারকামানসম্পন্নসেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের জন্য এর সর্বনিম্ন (যাওয়া-আসা) ভাড়া তিন হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। ১১ জানুয়ারি পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রশিদ বলেন, ‘দুই হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম এই জাহাজটিতে প্রাথমিকভাবে ৫০০ থেকে এক হাজার যাত্রী প্রত্যাশা করছি। আশা করছি পর্যায়ক্রমে যাত্রী বাড়বে। এখন সপ্তাহে তিনদিন চলাচল করলেও সপ্তাহে সাত দিনই চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে।’

জানা যায়, ফিরতি ভাড়া ও রাত্রিযাপনসহ ভিভিআইপি প্যাকেজের আওতায় দুজনের কেবিনের ভাড়া পড়বে ৫০ হাজার টাকা; ফ্যামিলি প্যাকেজের আওতায় চার জনের স্পেশাল ক্লাস বাংকারের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা; রয়েল প্যাকেজের আওতায় দুজনের রয়েল স্যুটের ভাড়া ৪৫ হাজার টাকা; দুজনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটের ভাড়া ৩০ হাজার টাকা এবং বাংকার বেড প্যাকেজের আওতায় একজনের ভাড়া পড়বে ১০ হাজার টাকা। ইকোনমি প্যাকেজের আওতায় ভাড়া পড়বে তিন হাজার টাকা।এছাড়াও বিজনেস ক্লাস সিটের ভাড়া চার হাজার টাকা।

একমুখী ভাড়া ও রাত্রিযাপনসহ ভিভিআইপি কেবিনে দুজনের ভাড়া পড়বে ২৫ হাজার টাকা; ফ্যামিলি প্যাকেজে স্পেশাল ফার্স্ট ক্লাস বাংকার বেড ২৫ হাজার টাকা এবং রয়েল প্যাকেজে দুজনের ভাড়া পড়বে ২০ হাজার টাকা। দুজনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা এবং একজনের সিঙ্গেল বাংকার বেড সাত হাজার টাকা। বিজনেস ক্লাস সিটের ভাড়া দুই হাজার ৫০০ টাকা ও ইকোনমি সিটের ভাড়া দুই হাজার টাকা।

প্রমোদতরীটিতে আছে একটি রেস্তোরাঁ, স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন এবং কয়েন পরিচালিত ঝর্ণা। কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নতুন আঙিকে সাজিয়েছেন।

শিরোনাম